সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার উদ্দেশ্যসমূহ আলোচনা কর
সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার উদ্দেশ্যসমূহ আলোচনা কর |
সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার উদ্দেশ্যসমূহ আলোচনা কর
- অথবা, সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যসমূহ বর্ণনা কর ।
- অথবা, সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার উদ্দেশ্যসমূহ সংক্ষেপে ব্যাখ্যা কর ।
উত্তর : ভূমিকা : সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার মাধ্যমে আগামী ৫ বছরে অর্থাৎ ২০১৬ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন কর্মসূচির মাধ্যমে দেশকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ সরকার।
সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার ব্যাপক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার উদ্দেশ্য : নিম্নে সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার উদ্দেশ্যগুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হলো :
১. শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নয়ন : সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো শিক্ষাক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো। উন্নত জাতিতে পরিণত হওয়ার জন্য শিক্ষা অর্জনের কোনো বিকল্প নেই।
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার হার ১০০ ভাগে পরিণত করাসহ দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার হার ৬০% এ উন্নীত করা সপ্তম পঞুবার্ষিকী পরিকল্পনার লক্ষ্য ।
২. শিল্পক্ষেত্রে উন্নয়ন : দেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে শিল্পক্ষেত্রে উন্নয়ন অতীব জরুরি । কারণ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার পূর্বশত শিল্পক্ষেত্রে উন্নয়ন ।
তাই শিল্পক্ষেত্রে উন্নয়নসাধন সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার অন্যতম লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। এ পরিকল্পনায় শিল্পক্ষেত্রে গড় প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ৬.৪৯% নির্ধারণ করা হয়েছে।
৩. পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন : সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে যোগাযোগ ও পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নয়ন অন্যতম।
দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার সাথে ৮৫৬ কিমি. নতুন রেলপথ বিনির্মাণ করা এবং ২০২০ সালের মধ্যে পদ্মা সেতুর কাজ শেষ করা ও ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ করাও সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
৪. রপ্তানি আয় বৃদ্ধি : রপ্তানি আয় ৫৪.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উপনীত করার লক্ষ্যে সরকার সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় রপ্তানি আয়কে ব্যাপক গুরুত্ব দিয়েছে । কারণ রপ্তানি আয় বৃদ্ধি করা সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার অন্যতম লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ।
৫. জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার নিয়ন্ত্রণ : বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধান সমস্যাগুলোর একটি জনসংখ্যা সমস্যা। তাই সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
৬. বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ক্ষেত্র সংস্কার : এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রধান কার্যক্রম ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদার সঠিক যোগানের লক্ষ্যে সরকার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ক্ষেত্রে সংস্কার কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।
দেশের অভ্যন্তরে বিদ্যুৎ উৎপাদন ২৩ হাজার মেগাওয়াট লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে মোট জনসংখ্যার ৯৬% লোককে বিদ্যুৎ সুবিধা প্রদান সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার একটি প্রধান লক্ষ্য ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনাটি বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশের প্রেক্ষাপটে অতীব গুরুত্বপূর্ণ।
আলোচিত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছাড়াও জ্বালানি ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন, তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়ন, গবেষণা কাজে উন্নয়ন ও দেশকে শতভাগ স্যানিটেশনের আওতায় আনার লক্ষ্য নির্ধারিত হয়েছে। এসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন হলে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়া সম্ভব।