মনের মত বিয়ে হওয়ার আমল এর পাশাপাশি কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক
বিয়ে হলো একজন পুরুষ এবং একজন নারীর মধ্যে সামাজিক, ধর্মীয় এবং আইনি বন্ধন যা তাদের স্বামী-স্ত্রী হিসেবে পরিণত করে। বিভিন্ন সমাজ ও সংস্কৃতিতে বিয়ের রীতিনীতি ও আইনি প্রক্রিয়া ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে।
মনের মত বিয়ে হওয়ার আমল এর পাশাপাশি কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক |
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে: ধর্মীয় রীতিনীতি:
বাংলাদেশে বেশিরভাগ মানুষ মুসলিম হওয়ায় ইসলামী রীতিনীতি অনুযায়ী বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। ইসলামে বিয়েকে "নিকাহ" বলা হয়। নিকাহের জন্য কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়, যেমন:
- বর ও কনে উভয়ের সম্মতি
- ওয়ালীর (কনের পক্ষ থেকে একজন পুরুষ অভিভাবক) উপস্থিতি
- মোহর (স্ত্রীর জন্য উপহার) নির্ধারণ
- দুইজন সাক্ষীর উপস্থিতি
আইনি প্রক্রিয়া:
বাংলাদেশে "মুসলিম বিবাহ আইন, ১৯৬১" এবং "বাংলাদেশ বিবাহ নিবন্ধন আইন, ১৯৭৪" অনুযায়ী বিয়ে নিবন্ধন করা আবশ্যক। বিয়ে নিবন্ধনের জন্য নির্ধারিত আবেদনপত্র পূরণ করে সংশ্লিষ্ট কাজী অফিসে জমা দিতে হয়।
বিবাহের উদ্দেশ্য:
- পরিবার গঠন: বিয়ের মাধ্যমে একজন পুরুষ ও একজন নারী একটি পরিবার গঠন করে।
- সামাজিক স্বীকৃতি: বিয়ে সমাজে স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কের স্বীকৃতি प्रदान করে।
- ধর্মীয় দিক: ইসলামে বিয়েকে একটি পবিত্র বন্ধন হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- মানসিক ও শারীরিক চাহিদা পূরণ: বিয়ের মাধ্যমে একজন পুরুষ ও একজন নারী একে অপরের মানসিক ও শারীরিক চাহিদা পূরণ করতে পারে।
বিবাহের রীতিনীতি:
বাংলাদেশে বিবাহের রীতিনীতি বিভিন্ন সম্প্রদায় ও পরিবারের রীতিনীতি অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। তবে কিছু সাধারণ রীতিনীতির মধ্যে রয়েছে:
- গায়ে হলুদ: বিয়ের আগের দিন বর ও কনের গায়ে হলুদ মাখানো হয়।
- মেহেদি: বিয়ের আগের দিন কনের হাতে মেহেদি দেওয়া হয়।
- বরযাত্রা: বর ও তার পরিবার বরযাত্রী নিয়ে কনের বাড়িতে যায়।
- বিবাহ অনুষ্ঠান: কাজী অফিসে বা মসজিদে কাজীর উপস্থিতিতে বর ও কনে "কবুল" বলেন।
- বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা: বিয়ের পর বর ও কনের জন্য বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা, যেমন: বৌভাত, গায়ে হলুদ, জামাই ষষ্ঠী ইত্যাদি পালন করা হয়।
মনের মত বিয়ে হওয়ার আমল এর পাশাপাশি কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক বিবেচনা করা উচিত
প্রথমত:
নিজের যোগ্যতা বৃদ্ধি:
- শিক্ষাগত, পেশাগত, এবং মানসিক দিক থেকে নিজেকে প্রস্তুত করা।
- ভালো চরিত্র, আচার-আচরণ এবং ব্যক্তিত্ব গড়ে তোলা।
দ্বিতীয়ত:
- পারিবারিক ও সামাজিক প্রচেষ্টা:
- পরিবারের মাধ্যমে উপযুক্ত পাত্র/পাত্রী খোঁজা।
- বিবাহের বাজারে নিজের সার্বক্ষণিক উপস্থিতি নিশ্চিত করা।
তৃতীয়ত:
- আল্লাহর কাছে দোয়া:
- মনের মতো জীবনসঙ্গী পাওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে বিনীতভাবে দোয়া করা।
- নিয়মিত নামাজ, রোজা, ওয়ায-মাহফিল, এবং দান-সদকা করা।
কিছু কার্যকরী আমল:
হজরত মুসা (আঃ) এর দোয়া:
"রাব্বি ইন্নি লিমা আনজালতা ইলাইয়া মিন খাইরিন ফক্বীর" (সূরা কাসাস: আয়াত ২৪)
সুরা ইয়াসিন তেলাওয়াত:
প্রতিদিন সকালে সূর্যোদয়ের আগে সুরা ইয়াসিন তেলাওয়াত করা।
তাসবিহে ফাতেমা:
প্রতিদিন নিয়মিত তাসবিহে ফাতেমা পড়া।
"ইয়া ফাত্তাহু" দোয়া:
প্রতিদিন ৪০ বার "ইয়া ফাত্তাহু" দোয়া পড়া।
শুক্রবার রাতে দোয়া:
শুক্রবার রাতে 'সুরা ইয়া-সিন' ও 'সুরা আদ-দুখান' তেলাওয়াতের পর দোয়া করা।
মনে রাখতে হবে:
- বিয়ে শুধুমাত্র আমলের মাধ্যমে হবে না, বরং উপরোক্ত বিষয়গুলোও গুরুত্বপূর্ণ।
- ধৈর্য ধরে আল্লাহর উপর ভরসা রাখতে হবে।
- অন্যায় ও অসৎ পন্থা অবলম্বন করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
বিশেষ দ্রষ্টব্য:
- উপরোক্ত তথ্যগুলো বিভিন্ন ইসলামিক ওয়েবসাইট ও ভিডিও থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।
- কোন তথ্যের ভুল থাকলে ক্ষমার জন্য অনুরোধ করছি।
- বিয়ের ব্যাপারে সর্বোত্তম সিদ্ধান্তের জন্য একজন আলেমের সাথে পরামর্শ করা উচিত।