একটি উত্তম পরিকল্পনার বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর
একটি উত্তম পরিকল্পনার বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর |
একটি উত্তম পরিকল্পনার বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর
- অথবা, একটি উত্তম পরিকল্পনার বৈশিষ্ট্য লেখ।
- অথবা, উত্তম পরিকল্পনার বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা কর ।
উত্তর : ভূমিকা : কীভাবে ইপ্সিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে তার নীতি ও বাস্তবায়ন কাঠামো এবং অগ্রগতি পরিমাপের মানদণ্ড পরিকল্পনার মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।
পরিকল্পনার ওপর নির্ভর করেই ব্যবস্থাপনার অন্যান্য কাজ সম্পাদিত হয়। তাই পরিকল্পনা ভালো না হলে অন্যান্য কাজ হতেও প্রত্যাশিত সাফল্য আশা করা যায় না। তাই উত্তম পরিকল্পনার গুরুত্ব অপরিসীম।
● একটি উত্তম পরিকল্পনার বৈশিষ্ট্য : নিম্নে উত্তম পরিকল্পনার বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা করা হলো :
১. নির্দিষ্ট লক্ষ্য : সঠিক পরিকল্পনার নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য থাকতে হবে। কেননা পরিকল্পনা রচিত হয় সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যার্জনের জন্য। কারণ উদ্দেশ্য স্থির ও নির্দিষ্ট না থাকলে পরিকল্পনার কার্যাবলি সঠিকভাবে সম্পাদিত হতে পারে না।
তাই আদর্শ পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে গেলে প্রথমে উদ্দেশ্য স্থির করতে হয়। তারপর ঐ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে উপযুক্ত ধারাবাহিক কর্মপন্থা স্থির করতে হয় ।
২. দক্ষ সাংগঠনিক ব্যবস্থা : দক্ষ সাংগঠনিক ব্যবস্থা উত্তম পরিকল্পনার অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য। পরিকল্পনা প্রণয়নকারী একটি প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বিভাগ ও উপবিভাগের সম্পর্কের প্রতিফলন ঘটা উচিত।
পরিকল্পনার কোন দিক কোন বিভাগ কর্তৃক সম্পন্ন হবে তা পরিকল্পনায় বর্ণিত না থাকলে এর বাস্তবায়নে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৩. নির্ভুলতা : পরিকল্পনা যতদুর সম্ভব নির্ভুল হওয়া বাঞ্ছনীয়। আর এর জন্য সঠিক সময়ে সঠিক পূর্বানুমান অপরিহার্য। পরিকল্পনা নির্ভুল না হলে প্রতিষ্ঠানের অর্থ, শ্রম ও সম্পদের অপচয় বৃদ্ধি পায়।
এজন্য অতীত অভিজ্ঞতা পরিস্থিতি এবং তথ্যাবলির বিশ্লেষণের ওপর ভিত্তি করে পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হলে পরিকল্পনা নির্ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে ।
৪. ধারাবাহিকতা : পরিকল্পনা একটি চলমান প্রক্রিয়া। একটি পরিকল্পনা শেষ না হতেই অন্যটি হাজির থাকা উচিত । কেননা পরিকল্পনা ব্যতীত কোনো কাজে সাফল্য আসে না ।
৫. পরিবর্তনশীলতা : ব্যবসায় পরিবেশ যেমন— ক্রেতার রুচি, চাহিদা, পণ্যমূল্য, প্রতিযোগীদের অবস্থা ইত্যাদি সদা পরিবর্তনশীল । কাজেই পরিকল্পনা এমন হওয়া উচিত যেন পরিবর্তনের সঙ্গে সহজে খাপখাওয়ানো যায় ।
৬. গ্রহণযোগ্যতা : উত্তম পরিকল্পনা অবশ্যই প্রতিষ্ঠানের সর্বশ্রেণির কর্মকর্তা ও কর্মচারী কর্তৃক সাদরে গৃহীত হতে হবে। সাধারণত পরিকল্পনার কাজ প্রতিষ্ঠানের শীর্ষস্তর থেকে শুরু করা হয়। তবে এর সঙ্গে সর্বস্তরের কর্মচারীদের সম্পৃক্ত করা হলে পরিকল্পনার গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পায় ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে যেমন একটি উত্তম পরিকল্পনা প্রয়োজন, তেমনি পরিকল্পনা উত্তম হতে হলে তার মধ্যে কতিপয় বৈশিষ্ট্য বা গুণ থাকা প্রয়োজন। উপরে সেগুলো আলোচনা করা হয়েছে। কেননা ব্যবস্থাপনার মূল চাবিই হলো পরিকল্পনা ।