১৯১৯ সালের স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন আইন সম্পর্কে আলোচনা কর

 

১৯১৯ সালের স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন আইন সম্পর্কে আলোচনা কর
১৯১৯ সালের স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন আইন সম্পর্কে আলোচনা কর

১৯১৯ সালের স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন আইন সম্পর্কে আলোচনা কর

  • অথবা,  ১৯১৯ সালের স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন আইন সম্পর্কে বর্ণনা কর।
  • অথবা, ১৯১৯ সালের স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন আইন সম্পর্কে লেখ।

উত্তর : ভূমিকা : স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থাকে অধিকতর কার্যকরী করার জন্য বিভিন্ন কমিটি ও কমিশনের সুপারিশক্রমে স্যার এসপি সিনহা ১৯১৮ সালের ২৪ এপ্রিল একটি খসড়া আইন তৈরি করেন, যা ১৯১৯ সালের স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন আইনে পরিণত হয় । এ আইন অনুযায়ী দ্বিস্তর বিশিষ্ট গ্রাম স্বায়ত্তশাসনের ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয় ।

• ১৯১৯ সালের স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন আইন : বঙ্গীয় গ্রামীণ স্বায়ত্তশাসন আইন, ১৯১৯ স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থার ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ ছিল। 

এ আইন অনুযায়ী স্বায়ত্তশাসিত সরকারের তিনটি স্তরের পরিবর্তে দুটি স্তর করা হয়। স্থানীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের সদস্যসংখ্যা বৃদ্ধি করা হয় এবং নির্বাচন রীতি প্রবর্তন করা হয়। 

প্রত্যেকটি জেলার জন্য জেলা বোর্ড, শহরাঞ্চলের জন্য মিউনিসিপ্যালিটি ও গ্রামাঞ্চলের জন্য ৯ সদস্যের ইউনিয়ন বোর্ড প্রতিষ্ঠা করা হয়। 

ইউনিয়ন বোর্ডের কর্তব্য ছিল দুধরনের— ১. বাধ্যতামূলক ও ২. ঐচ্ছিক। কর আদায় করা ও চৌকিদারদের মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা করা ছিল বাধ্যতামূলক কাজ । 

গ্রামাঞ্চলে জনগণের কল্যাণসাধনের জন্য কাজ করা ছিল ঐচ্ছিক কাজের অন্তর্ভুক্ত। এ আইনেও সরকারি নিয়ন্ত্রণ যথেষ্ট ছিল ।

১৯১৯ সালের স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন আইনের সীমাবদ্ধতা : সরকার ১৯১৯ সালের স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন আইনে বিভিন্ন কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ইউনিয়ন বোর্ডের ওপর ব্যাপক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছিল। 

ইউনিয়ন বোর্ডের যাবতীয় কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করতেন সার্কেল অফিসার। তিনি বোর্ডের হিসাব অডিট করতেন। ইউনিয়ন বোর্ডের হাতে যে বিচারিক ক্ষমতা ছিল সেখানে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট প্রভূত ক্ষমতা প্রয়োগ করতেন। 

ইউনিয়ন বেঞ্চের রায়কে তিনি স্থগিত বা বাতিল করতে পারতেন এবং ইউনিয়ন বোর্ডে পরিচালনাধীন কোনো মামলা অন্য কোর্টে স্থানান্তরের নির্দেশ দিতে পারতেন। ইউনিয়ন বোর্ড গ্রাম্য চৌকিদারদের নিয়োগ দান করলেও তাদের অপসারণের ক্ষমতা ছিল জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের হাতে। 

মহিলাদের ভোটাধিকার না থাকায় ইউনিয়ন বোর্ডে নারীর অংশগ্রহণ ছিল না। তাছাড়া কেন্দ্রীয় সরকার প্রশাসনিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে ইউনিয়ন বোর্ডকে নিয়ন্ত্রণ করতো।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, স্থানীয় স্বায়ত্তশাসনের ইতিহাসে ১৯১৯ সালের স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন আইন মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত। 

এ আইনের মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী পঞ্চায়েতকে বিলুপ্ত করে গ্রামীণ পর্যায়ে ইউনিয়ন বোর্ডকে প্রশাসনের ক্ষুদ্রতম একক হিসেবে যথেষ্ট শক্তিশালী করা হয়। 

কিছু সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও ইউনিয়ন বোর্ড স্থানীয় পর্যায়ে স্বায়ত্তশাসন বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url