বীরশ্রেষ্ঠদের স্মরণে প্রথম ডাক টিকেট কবে প্রকাশিত হয়
দীর্ঘ নয়মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের বিনিময়ে আমরা আমাদের দেশটি স্বাধীন করতে পেরেছি। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর কাছ থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করতে পেরেছি। এই দিনটি হচ্ছে ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১।
বীরশ্রেষ্ঠদের স্মরণে প্রথম ডাক টিকেট কবে প্রকাশিত হয় |
প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ আমাদের এই দেশটিকে স্বাধীন করার জন্য তাদের জীবন ও প্রাণ দিয়েছিলেন। তাদেরই মধ্যে এমন সাতজন ব্যক্তি আছেন যারা ইতিহাসের পাতায় সর্বদা বীরশ্রেষ্ঠ বলে বিবেচিত হয়ে থাকবেন।
এই দিনটি আমাদের বাঙ্গালী জাতির জীবনে এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে বাংলাদেশের ডাক বিভাগও ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস দিনটি উদযাপন করে থাকে।
এমনকি তারা প্রতিবছর বিজয় দিবসের স্মারক ডাকটিকেট, উদ্বোধনী খাম প্রকাশ করে দিনটিকে বিশেষ ভাবে পালন করে থাকে।
সুপ্রিয় দর্শকবৃন্দ এখন আমাদের আলোচনার প্রধান বিষয়বস্তু হচ্ছে বীরশ্রেষ্ঠদের স্মরণে প্রথম ডাক টিকেট কবে প্রকাশিত হয়? আমার সকলেই জানি ইতিহাসের পাতায় সাতজনকে বীরশ্রেষ্ঠ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। চলুন সর্বপ্রথম সাতজন বীরশ্রেষ্ঠদের নামগুলো জেনে নেওয়া যাক:
১/মোস্তফা কামাল
২/মোহাম্মদ হামিদুর রহমান
৩/মুন্সি আব্দুল রউফ
৪/রুহুল আমিন
৫/মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর
৬/মতিউর রহমান
৭/নূর মোহাম্মদ শেখ
বীরশ্রেষ্ঠদের স্মরণে প্রথম ডাক টিকেট কবে প্রকাশিত হয়?
বীরশ্রেষ্ঠদের স্মরণে প্রথম ডাক টিকেট ১৬ ডিসেম্বর ১৯৮২ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। বীরশ্রেষ্ঠদের স্মরণে প্রথম ডাক টিকেট কবে প্রকাশিত হয়? এর পিছনে একটি তাৎপর্যপূর্ণ ইতিহাস রয়েছে। চলুন সেই ইতিহাসটি জেনে নেওয়া যাক।
বিভিন্ন ধরনের ডাকটিকেট সংগ্রহকারক অফিস, ইন্টারনেট এবং বইপত্র ঘেটে জানা গিয়েছে যে বিজয় দিবসের প্রথম ডাকটিকিট প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৭২ সালের দিকে। যুক্তরাজ্য থেকে সেই ডাকটিকেট গুলো ছাপিয়ে আনা হয়েছিল। পরবর্তীতে ১৯৮২ সালের দিকে আমাদের দেশের ৭ জন বীরশ্রেষ্ঠকে স্মরণ করে ওই বছরই বিজয় দিবসের স্মারক ডাক টিকিট প্রকাশিত হয়েছিল।
কিন্তু সেই সময়ের দিকে নিয়মিত ডাক টিকেট প্রকাশ করা হতো না। ডাক টিকেট প্রকাশনায় কিছুটা অনিয়ম দেখা গিয়েছিল বলে জানা যায়। তার অনেক বছর পর ২০১১ সালের পর হতে নিয়মিত ডাক টিকেট প্রকাশ করা হচ্ছে।
ডাকটিকেট বিক্রয় কেন্দ্র থেকে জানা যায় যে ১৯৭২ সাল থেকে ২০১১ সালের আগ পর্যন্ত বিক্রয় কেন্দ্র থেকে তেমন ডাকটিকেট পাওয়া যেত না। তখন প্রতিবেদকরা কেনার আগ্রহ প্রকাশ করলেও বিক্রয় কেন্দ্রের কর্মকর্তারা ডাকটিকেট বিক্রি করতে পারেনি। তাই ২০১১ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে যে সকল ডাকটিকেট সংগ্রহ করা হয়েছিল শুধুমাত্র সেগুলোই তারা বিক্রি করতে পেরেছে।
ডাকটিকেট সংগ্রহকারী জানান, স্ট্যাম্পওয়ার্ল্ড ডট কম ওয়েবসাইটে বাংলাদেশের অন্যান্য ডাক টিকেট এর পাশাপাশি বিজয় দিবসের বিভিন্ন ডাকটিকেট পাওয়া যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। সেই ওয়েবসাইট এক্সপ্লোর করার পর ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত কি কি ডাকটিকিট প্রকাশিত হয়েছে সেটি জানার চেষ্টা করা হয়। ১৯৭২ এবং ১৯৮২ সালের মাত্র দুইটি বিজয় দিবসের ডাকটিকেট এর সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল।
এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা হলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ থেকে একজন মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জানান, “বিজয় দিবসের স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করতে পারাটা আমাদের জন্য আনন্দের। এটা দেশের জন্য গর্বেরও। বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস—এগুলো তো বাদ দেওয়ার কোনও অবকাশ নেই। এগুলো নিয়ে ধারাবাহিকভাবে স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ হবে নিয়মিতভাবে। এ বছরও প্রকাশিত হচ্ছে। ২০২১ সালেও বড় কলেবরে প্রকাশ হবে।”
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, ‘‘আমাদের সরকার ক্ষমতায় আসার পরে এটা নিয়মিতই প্রকাশ হচ্ছে। আগে কেন হয়নি বা কেন নিয়মিত ছিল না, সেটা সে সময়কার সরকারের ব্যাপার।”
১৯৮২ সালের দিকে বিজয় দিবসের দিন সাতজন বীরশ্রেষ্ঠ কে স্মরণ করে সাতটি ডাক টিকেট ছাপানো হয়েছিল। ডাক বিভাগ থেকে এই ডাক টিকেট গুলো ডিজাইন করেছিলেন আহমেদ এফ করিম। প্রতিটি ডাক টিকিটের মূল্য ছিল ৫০ পয়সা করে। অস্ট্রেলিয়া থেকে ডাক টিকেটগুলো ডিজাইন করা হয়েছিল।