তথ্যপূর্ণ : ময়মনসিংহ কিসের জন্য বিখ্যাত
ময়মনসিংহ বাংলাদেশের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত একটি শহর। বিভিন্ন কারণে এর খ্যাতি
অর্জন করেছে। এটি মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং
একাডেমিক শ্রেষ্ঠত্বের একটি স্থান। তাই আজকের আর্টিকেলে আমরা জানবো ময়মনসিংহ কিসের জন্য বিখ্যাত।ময়মনসিংহকে সত্যিকার অর্থে অনন্য এবং বিখ্যাত করে তুলেছে এমন দিকগুলি নিয়ে
আলোচনা করব।
নমস্কার! সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। 🥰আপনাদের
আশীর্বাদে আমিও ভালো আছি। আজকের টপিকে আপনাকে স্বাগত!
আমারলোড ব্লগে
প্রযুক্তিগত আপডেট থাকতে
গুগল নিউজে ★ Follow
করুন।
ময়মনসিংহ কিসের জন্য বিখ্যাত
ময়মনসিংহ জেলা ময়মনসিংহ বিভাগের অন্তর্গত একটি জেলা। ময়মনসিংহ
জেলার মোট আয়তন ৪,৩৬৩.৪৮ বর্গকিমি বা (১,৬৮৪.৭৫ বর্গমাইল)। ময়মনসিংহ
জেলাতে মোট ১৩টি উপজেলা রয়েছে। ১৩টি উপজেলার মধ্যে ময়মনসিংহ বিখ্যাত হওয়ার
বেশ কিছু করণ রয়েছে।
মুক্তাগাছার রাজবাড়ি || ময়মনসিংহ কিসের জন্য বিখ্যাত
ছবিঃ মুক্তাগাছার রাজবাড়ি (উইকিপিডিয়া) |
বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলার প্রাচীন এবং ঐতিহাসিক স্থান হলো মুক্তাগাছার রাজবাড়ি।
ইতিহাস থেকে জানা যায় আলাপসিং পরগণার খাজনার দায়ে নিলামে উঠলে মুর্শিদাবাদ
নবাবের কর্মচারী শ্রীকৃষ্ণ আচার্য চৌধুরীর এই পরগনা কিনে নেয়। তখন ওই এলাকার
নাম ছিল বিনোদবাড়ি। শ্রীকৃষ্ণ আচার্য চৌধুরীর চার ছেলেরা যখন প্রথম
ওই রাজবাড়িতে যাই তখন স্থানীয়রা নজরাঙ্গা দিয়ে বরণ করে নেয়। তারপর থেকে
এলাকার নাম হয় মুক্তাগাছা।
শশী লজ || ময়মনসিংহ কিসের জন্য বিখ্যাত
ছবিঃ শশী লজ (সমকাল) |
শশী লজ ময়মনসিংহ জেলা শহরে অবস্থিত একটি রাজবাড়ি। ঊনবিংশ শতকে মুক্তগাছার
জমিদার মহারাজ সূর্যকান্ত আচার্য চৌধুরী নান্দনিক একটি প্রাসাদ নির্মাণ
করেন। মহারাজ সূর্যকান্ত তার দত্তক ছেলের শশীকান্ত আচার্য চৌধুরীর নামে এই
ভবনের নাম রাখা হলো শশী লজ। স্থানীয়ভাবে মংমনসিংহ রাজবাড়ী নামেও এটি
পরিচিত।
১৮৯৭ সালের বিখ্যাত এই ভবনটি ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্থ হলে সূর্যকান্ত
আচার্য চৌধুরী অত্যান্ত ব্যথিত হয়ে পড়ে। পরে ১৯০৫ সালে জমিদার সূর্যকান্ত
আচার্য চৌধুরী পুনরায় আবার একই স্থানে নতুন করে শশী লজ নির্মাণ করেন। তারপর আস্তে
আস্তে শশী লজ হয়ে ওঠে অপরূপ, অনিন্দ্যসুন্দর।
শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালা || ময়মনসিংহ কিসের জন্য বিখ্যাত
ছবিঃ জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালা (উইকিপিডিয়া) |
শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালা বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলার অন্তর্গত। এই
সংগ্রহশালা শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের যাত্রাপথের মহৎ কৃতিত্ব এবং ঐতিহাসিক
মূল্যবান সাহিত্যিক কাজগুলির উপর ভিত্তি রেখে স্থাপনা করা হয়েছে।
শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালা একটি স্থান যেখানে তিনি তার উল্লেখযোগ্য
ছবি যেমন গুণটানা, চিত্রকলা, সাহিত্য, নদী পারাপারের অপেক্ষায়
পিতা-পুত্র এবং দুর্ভিক্ষ ও প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। এটি ময়মনসিংহের সাংস্কৃতিক
জীবনের গর্বময় অংশ। বর্তমানে এখানে মোট ৬৩ টি চিত্রকর্ম রয়েছে।
গারো পাহাড় || ময়মনসিংহ কিসের জন্য বিখ্যাত
ছবিঃ গারো পাহাড় (কালের কন্ঠ) |
গারো পাহাড় একটি পর্বতীয় প্রাকৃতিক অঞ্চল। এটি ভারতের মেঘালয়
রাজ্যের গারো-খাসিয়া পর্বতমালার একটি অংশ। একে বাংলাদেশর সবচেয়ে বড় পাহাড়
বলা হয়।
গারো পাহাড় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। এই পাহাড়ের উচ্চ স্থানে বন্য ফুল,
মূল্যবান গাছ, বাঁশ এবং বেত ইত্যাদি জন্মায়। যা মন্দ ও শান্ত পরিবেশ
সৃষ্টি করে। পাহাড়ি অঞ্চলে সবচেয়ে মূল্যবান গাছ হলো শালগাছ। এছাড়াও
বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, সরীসৃপ জীব, বন্য হাতি, হরিণ, বাঘ, বন্য শূকর,
ময়না এবং ধনেশ পাখিও প্রচুর দেখা যায়।
বাংলাদেশে মধ্যে একটি দর্শনীয় স্থান হল গারো পাহাড়।
ময়মনসিংহ জাদুঘর || ময়মনসিংহ কিসের জন্য বিখ্যাত
ছবিঃ ময়মনসিংহ জাদুঘর (উইকিপিডিয়া) |
ময়মনসিংহ জাদুঘর বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলার মৌলিক সাংস্কৃতিক স্থান। এটি
ময়মনসিংহের শ্রীমঙ্গল উপজেলার একটি প্রমিনেন্ট আদিবাসী জাতির সাংস্কৃতিক
কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।
এই জাদুঘরে রয়েছে স্থানীয় স্থাপত্য, হস্তশিল্প, মূর্তি, শিলালিপি
ও বিভিন্ন বাণিজ্যিক দ্রব্যাদিসহ পুরাতন কিছু জিসিপত্র। এখানে বেশির ভাগ
জিনিসপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে বিভিন্ন জমিদার বাড়ি থেকে। এছাড়াও জাদুঘরে সংরক্ষিত
রয়েছে যেমন - মহিষের সিং, হাতির মাথা, মার্বেল পাথরের গোল
টেবিল, মোমবাতি ঝাড়, কাঠের শোকেজ, হাতির দাতের নকশি করা সোফা
সেট, শ্বেত পাথর, গন্ডারের চামড়া, খড়গ, বল্লম ইত্যাদি।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় || ময়মনসিংহ কিসের জন্য বিখ্যাত
ছবিঃ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (ট্রিপ পেইন্টার) |
ময়মনসিংহ জেলা বিখ্যাত হওয়ার পিছনে রয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। এটি
বাংলাদেশের প্রথম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রায় ১২৬১ একর
জায়গা নিয়ে অবস্থিত। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান উদ্দেশ্য
হলো জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ কৃষিবিদ, প্রাণিবিজ্ঞানী, প্রযুক্তিবিদ ও কৃষি
প্রকৌশলী তৈরি করা।
ময়মনসিংহ জেলার দর্শনীয় স্থান এর তালিকা
- বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
- মুক্তাগাছার রাজবাড়ী
- শশী লজ
- ময়মনসিংহ জাদুঘর
- শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালা
- গারো পাহাড়
- গৌরীপুর জমিদার বাড়ি
- কাদিগড় জাতীয় উদ্যান
- পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদী
- বৈলর জমিদার বাড়ি
- চীনা মাটির টিলা
- দূর্গাবাড়ী
- নজরুল স্মৃতি যাদুঘর
- শহীদ আব্দুল জব্বার জাদুঘর
ময়মনসিংহ কিসের জন্য বিখ্যাত এই ভিডিওতে দেখুন
প্রশ্ন ও উত্তর
১. ময়মনসিংহের প্রাচীন নাম কি ছিল ?
উত্তরঃ বাংলাদেশের একটি পুরাতন জেলা হলো ময়মনসিংহ। এর আগে এই এলাকার নাম
ছিল নসরৎসাহী। পরবর্তীতে নাম রাখা হয় নাসিরাবাদ।
তাই ময়মনসিংহের প্রাচীন নাম নাসিরাবাদ।
২. ময়মনসিংহ জেলার মোট আয়তন কত ?
উত্তরঃ ময়মনসিংহ জেলার মোট আয়তন
৪,৩৬৩.৪৮ বর্গকিমি বা (১,৬৮৪.৭৫ বর্গমাইল)।
৩. গৌরীপুর কেন বিখ্যাত ?
উত্তরঃ গৌরীপুর প্রাচীন যুগের অনেক ঐতিহাসিক স্থান রয়েছে। এই সকল স্থান
পর্যটককেদর দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। জমিদার শ্রীকৃষ্ণ চৌধুরীর মেয়ে নাম
ছিল গৌরী। তার নাম অনুসারে রাখা হয় গৌরীপুর।
৪. মুক্তিযুদ্ধের সময় ময়মনসিংহ কত নম্বর সেক্টরে ছিল?
উত্তরঃ মুক্তিযুদ্ধের সময় ময়মনসিংহ ১১ নম্বর সেক্টরে ছিল।
৫. ময়মনসিংহ বিখ্যাত ব্যক্তি
উত্তরঃ ময়মনসিংহ জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি - কানাহরি দত্ত, শহীদ সৈয়দ নজরুল
ইসলাম, আনন্দ মোহন বসু, আব্দুল ওয়াহেদ বোকাইনগরী, আব্দুল জব্বার, আব্দুল জব্বার
শেখ, আব্দুল হাই মাশরেকী, খান সাহেব আব্দুল্লাহ, আবুল কালাম শামসুদ্দিন, আবুল
মনসুর আহমদ, মোঃ আলতাব আলী, কলম আলী উকিল।
যদি এই ব্লগটি আপনাদের বিন্দুমাত্র কাজে লেগে থাকে বা উপকারে আসে তবেই আমাদের
স্বার্থকতা। আপনাদের তথ্যের প্রয়োজন মেটাতে আমরা ব্লগিংয়ে নিযুক্ত।
পরিচিত কাউকে এই তথ্য জানাতে শেয়ার করুন। আমারলোড ব্লগে এডুকেশন,
জব সার্কুলার, ফ্রীল্যান্সিং, ও
তথ্যমূলক
ব্লগ পোস্টগুলি প্রচার করে থাকে। আরও জনপ্রিয় ব্লগ পড়তে নীচে স্ক্রোল করুন।