বিস্তারিত: গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায়
বর্তমানে এমন কোন লোক নেই যার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা নেই। ছোট বড় সবারই গ্যাস্ট্রিক সমস্যা রয়েছে তবে, কারো হয়তো কম আবার কারো হয়তো বেশি। তাই আজকে আমি আপনাদের জানাবো কিভাবে গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায় সম্পর্কে।
বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন? আশা করি খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়া ও আশীর্বাদে ভালো আছি। আজকের নতুন টপিকে আপনাকে স্বাগতম!
গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায়
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়নি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া খুব মুসকিল। বর্তমানে মানুষ গ্যাস্ট্রিক ও এসিডিটি হলে সবাই আগে ওষুধের পিছনে ছুটছেন। কিন্তু এই ওষুধ খাওয়ার জন্য, আপনি হয়তো ওষুধের উপর নির্ভরশীল হয়ে যাচ্ছে।
ফলে দীর্ঘদিন পর্যন্ত এই ওষুধ সেবন করার কারণে পাকস্থলীর ক্যান্সার হতে পারে। তাই আপনাকে আগে জানতে হবে কিভাবে ওষুধ ছাড়া গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটি দূর করা যায়।
গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটি কী
সবার আগে আপনাকে জানতে হবে গ্যাস্টিক বা এসিডিটি কি "পাকস্থলীতে যখন অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া এবং ক্ষতের সৃষ্টি করা"।এইগুলো হয়ে থাকে সাধারণত অতিরিক্ত মসলা জাতীয় খাবার, ঝাল, ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার। আমরা যে খাবার খাই তা হজম করতে অতিরিক্ত অ্যাসিডের প্রয়োজন হয়।
যখন HCl এর পরিমান অতিরিক্ত নিঃসৃত হয় সেই সময় পাকস্থলী সে অবস্থা হয়ে থাকে তাকে গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটি বলা হয়।
কেন গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়?
আমরা যখন কিছু খাবার খাই সেই খাবারগুলো পাকস্থলীতে যাই, পাকস্থলী খাবার হজম করার জন্য কিছু অ্যাসিড ও আরও কিছু জিনিস তৈরি করে। এক্ষেত্রে অ্যাসিড ও খাবার দুটিই পাকস্থলী নিচের দিকে নামতে থাকে। যখন নিচের দিকে না মেনে গলার উপরের দিকে উঠে আসে তখন আমরা বুকে জ্বালাপোড়া অনুভব করি।
এখন প্রশ্ন হলো পাকস্থলীর অ্যাসিড কেন নিচের দিকে না মেনে উপরের দিকে চলে আছে? এক্ষেত্রে কোন কারণ ছাড়াই এমনটা হতে পারে আবার নির্দিষ্ট কিছু খাবার। এগুলো হল ভাজাপোড়া, অতিরিক্ত মসলা জাতীয় খাবার ইত্যাদি ইত্যাদি।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায় | peter gas komanor upay
প্রাকৃতিক উপায়ে গ্যাস্ট্রিক দূর করার মধ্যে যেগুলো সবচেয়ে বেশি কাজে লাগে তা হল আঁদা, রসুন, দই, শসা, মুড়ি, ডাবের পানি।
আঁদাঃ পেটে গ্যাস হলে আঁদা খুবই কার্যকারী একটি উপাদান। তাছাড়া আঁদা হজমশক্তি বাড়তে সক্ষম। গ্যাস হলে আঁদা কুচি কুচি করে কেটে লবনের সাথে খেলে গ্যাস থেকে দ্রুত রেহায় পাওয়া যায়। আপনি চাইলে আস্ত আদা পরিষ্কার করে ধুয়ে চিবিয়ে খাবেন এতে করে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
রসুনঃ যার গুনাগুনের কমতি নেই। রসুন এমন একটা জিনিস যা কোন বিকল্প নেই। আপনার গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটি হলে এক কোয়া রসুন কেয়ে ফেলুন দেখবেন সাথে সাথেই কাজ করতে শুরু করে দিছে।
তাছাড়া বিশেষজ্ঞদের মতে, কাঁচা রসুনের অনেক উপকার রয়েছে। হার্টে বা অন্যন্য রোগের জন্য কাঁচা রসুনের কোন বিকল্প নেই। আপনি চাইলে প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে এক কোয়া কাঁচা রসুন খেতে পারেন।
দইঃ গ্যাস্ট্রিক দূর করার ক্ষেত্রে দই খুবই কার্যকরী। দই শরীরের হজমশক্তি বাড়াতে সক্ষম। খাবার দ্রুত হজম করতে পারে। ফলে গ্যাস্ট্রিক হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম থাকে।
মুড়িঃ পেটে গ্যাসের ক্ষেত্রে মুড়ি খুব ভালো কার্যকরী। গ্যাস হলে আপনি মুড়ি খাবেন এবং খাওয়া পর পানি খেলে অনেক উপকার পাবেন।
শসাঃ এতে রয়েছে ফ্লেভানয়েড ও অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান যা আপনার গ্যাস কমাতে সাহায্য করবে। তাছাড়া পেট ঠান্ডা রাখতে শসা বেশ কার্যকরী।
ডাবের পানিঃ আপনি নিয়মিত ডাবের পানি খেলে গ্যাস থেকে মুক্তি পাবেন। কারণ ডাবের পানি হজম ক্ষমতা বাড়াই এবং খুবই সহজেই হজম হয়ে যাই। সম্ভব হলে প্রতিদিন একটি করে ডাব খান। তাহলে আপনার এই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে চিরতরে মুক্তি মিলবে।
উপরের কয়েকটি মাধ্যম ঠিকমত অ্যাপ্লাই করলে আপনাদের জানতে চাওয়া গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায় এই সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন।
তবে আপনাকে আপনার লাইফস্টাইল পরিবর্তন করতে হবে কারণ গ্যাস্ট্রিকের মূল হল ঠিক মতো খাবার না খাওয়া, সময় মতো ঘুমিয়ে না পড়া, ফাস্টফুড বেশি খাওয়া, ধুমপান করা এগুলো থেকে যতটা সম্ভব দুরে থাকতে পাড়লে গ্যাস্ট্রিক এর সমস্যা সমাধান অতি সহজে পেয়ে যাবেন।
প্রাকৃতিক উপায়ে গ্যাস্ট্রিক কমানোর
প্রাকৃতিকভাবেও এমন অনেক উপায় রয়েছে যার মাধ্যমে আপনার গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটি কমানো সম্ভব। তাই আমি নিচে কয়েকটি উপায় বলে দিচ্ছি যেগুলো খেয়াল করলে প্রাকৃতিকভাবে গ্যাস্ট্রিক কমানোর যাই।
- খুব সকালে ঘুম থেকে উঠতে হবে। তারপর শরীর চর্চা করতে হবে।
- প্রতিদিন সকালে উঠে এক কোয়া কাঁচা রসুন খাবেন।
- সময় মতো খাবার খাইতে হবে। তবে তা পরিমাণ মতো।
- নিয়মিত গোসল করবেন। এতে করে আপনার শরীর সুস্থ থাকবে।
- প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পান করুন। যাতে করে আপনার শরীরের ক্ষতিকর পদার্থগুলো বের হতে পাড়ে।
- ফাস্টফুড খাবার পরিহার করতে হবে। যা আপনার শীরের জন্য ক্ষতিকর।
- রাতে ঘুমানোর ২-৩ ঘন্টা আগে খাবার খেতে হবে।
গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায় বন্ধুরা এই টপিকটি পুরোটা পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ, যদি এই টপিকের কোনকিছু বুঝতে না পাড়েন তাহলে নিচে কমেন্ট করুন। আশা করি উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। আর আপনাদের যদি নতুন কিছু জানার থাকে তাহলে আমাদেরকে কমেন্টের মাধ্যমে জানান আমরা আপনাদের সেই বিষয়ে জানানোর চেষ্টা করবো। ধন্যবাদ Amarload.com এর সাথে থাকার জন্য।